নিজস্ব প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলির মহিলা কলেজ পাড়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা মহিলা কলেজ পাড়ার মোমিনুল ইসলাম মুকুল বিশ্বাস বাদী হয়ে সদর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফের হুকুমে চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জপাড়ার খান বাবুর ছেলে বায়েজিদ মুর্শিদ, সবুজপাড়ার আকবর মিস্ত্রির ছেলে ছোট, ভিমরুল্লাহ কলম ডাকাতের ছেলে রতন ও সিএন্ডবি উত্তরপাড়ার ইকুব্বার হোসেনের ছেলে চানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন দুর্বৃত্তরা মিলিমা ইসলামের মহিলা কলেজ পাড়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় তার অফিসের ড্রয়ারে থাকা ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় ও চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাদী জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম মুকুল বিশ্বাস জানান, আমার ভাতিজি মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। এ কারণে তার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করার জন্য এ হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা অফিসে ভাঙচুর চালানোর পর আমার বড় ভাই সাবেক সংসদ সদস্য মৃত শহীদুল ইসলামের বিশ্বাসের বসতবাড়িতেও হামলার চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তার পেটুয়া বাহিনী আমাদের ভয়-ভীতি দেখানোর জন্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। আমাদের পরিবারের সব সদস্য বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। এ কারণে আমাদের জনপ্রিয়তা দেখে তারা ভয় পাচ্ছে।
এ ঘটনায় মিলিমা বিশ্বাস এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তার পেটুয়া বাহিনী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই বাড়িতে গিয়েছিল। আমাকে না পেয়ে আমার অফিস ব্যাপকভাবে ভাংচুর করে।
ভিডিও বার্তায় তিনি আরও বলেন, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করুন। রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকবেই। তাই বলে এই হিংস্রতা নিয়ে নির্লজ্জভাবে একটা মানুষকে আক্রমণ করা হবে, এটা আমার ধারণার বাইরে। আমি চুয়াডাঙ্গার মাটি এক বিন্দুও ছাড়বো না। আমি রাজনীতি করি, আমার বাবা শহীদুল ইসলাম রাজনীতি করেছেন, আমার চাচা অহিদুল ইসলামও রাজনীতি করেছেন। সুতরাং এসব হামলা করে আমাকে রাজনীতি থেকে একচুলও বিচ্যুতি করতে পারবেন না। আমি কেন্দ্রীয় লিডারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যেখানে আমার জীবন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, তাহলে চুয়াডাঙ্গার মানুষের অবস্থা কী হতে পারে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির রাজনীতির যে কী অবস্থা আপনারা একটু অনুধাবন করুন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ জানান, এই হামলার সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। মিলির অফিস বিএনপির দলীয় কোনো অফিস না, ওটা তাদের পারিবারিক অফিস। যারা হামলা করেছে তাদের সঙ্গে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল বা বিএনপির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান, মিলিমার অফিসে হামলা হয়েছে—এই মর্মে সদর থানায় একটি অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।