নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন থেকে কোনো রকম বাধা দেওয়া হচ্ছে না কিংবা কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের মাঠ থাকবে সমতল। সেভাবে নির্বাচন কমিশনকে গঠন করা হবে। থাকবে না কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। অধিকার বঞ্চিত মানুষ আদায় করবে তাদের অধিকার। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হউক সেই সুপারিশ আমরা করবো।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অযোগ্য না হলে সবার অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত। আমরা চাই, সব দলের অংশগ্রহণে অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হউক।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রস্তাবনার কাজ প্রায় শেষ দিকে। হাজার প্রস্তাবনা এসেছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত প্রস্তাবনা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সংস্কারের প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তুলে দেয়া হবে। এরপর সেই প্রস্তাবনা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসে আলোচনা করে পরবর্তীতে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটবে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, অতীতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন চাপে ছিল। এবার তেমন পরিস্থিতি নেই। নির্বাচন কমিশন এবার পক্ষপাতমুক্ত হবে। এবারের কমিশনে নির্বাচন কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে নির্বাচনমুখী করতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য নির্বাচন সংস্কার কমিটি গঠন করেছে। উৎসবের ভোট যাতে ফিরে আসে এজন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইভিএম মেশিন ছিল একটি কালো বক্স। অতীতের নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো মেশিনের মাধ্যমে ভোট নিয়ে খেলা করেছে। এ দুর্বল পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য নয় মানুষ এটাকে গ্রহণ করেনি।
তিনি আরও বলেন, ভোটার তালিকা সংশোধন, হালনাগাদ করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। আমরা এসব বিষয়ে সুপারিশ করবো। নির্বাচন কমিশন অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে। অতীতে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের প্রভাবে প্রভাবিত হয়েছে, কেননা সেই নির্বাচনগুলো দলীয় সরকারের সময়ে হয়েছে।
এর আগে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় মিলনায়তনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।