নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আবাসিক হলে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ১৩০ দিন পেরোলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, অস্ত্র ও মাদকের সঙ্গে জড়িতদের ব্যবস্থা না নেওয়াতে তাদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসে উন্মুক্তভাবে চলাফেরা করছেন। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। এদিকে তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলছাড়া হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবির শাহপরান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে তল্লাশি করেন। এতে শাহপরান হলের ২১০, ৪২৪, ৪২৭, ৪২৯, ২১১, ২১৫, ৪২৩ কক্ষ থেকে মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন তাঁরা। ওই দিন উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে ছিল- একটি শটগান, একটি রিভলবার, ১০০ জিআই পাইপ, ১০টি রামদা, ১২টা চাকু, ৩টা চেইন, একটি হাতুড়ি ও একটি হেলমেট। এছাড়া দেড়শয়ের অধিক মদের বোতল ও ১০০ গ্রাম গাঁজা।
৫ আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরাতন প্রশাসনের ৮৫ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করে নতুন প্রশাসন নিয়োগ হয়। গত ৮ ও ১০ অক্টোবর একই হলে নতুন প্রক্টরিয়াল ও প্রাধ্যক্ষ বডি অভিযান চালিয়ে ফের অস্ত্র ও মদের বোতল উদ্ধার করে। এসময় পূর্বে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা কক্ষগুলো ছাড়াও শাহপরান হলের ২০২, ১০৬, ৪১৭, ৪১৯ নম্বর কক্ষ থেকে এক বস্তা জিআই পাইপ, ২টি চাকু, নেশাদ্রব্য খাওয়ার সরঞ্জাম, ১টি চায়নিজ কুড়াল ও মদের বোতল উদ্ধার করেন কর্তৃপক্ষ। ১৭ জুলাইয়ের পূর্বে এসব কক্ষ ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রিত ছিল। গত ২১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ এসব অস্ত্র সিলেটের জালালাবাদ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে পুলিশ তা আদালতে পাঠান বলে জানা গেছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর শাবিপ্রবিতে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। এর কয়েকদিন পর হল ও বিভিন্ন দপ্তর গুলোতে নতুন শিক্ষকেরা দায়িত্ব আসেন। বিষয়টি উল্লেখ করে শাবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার হওয়া কক্ষগুলো ছাত্রলীগের নেতারা নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি তৎকালীন হল কর্তৃপক্ষও নিশ্চুপ ছিলেন এসব ব্যাপারে। তাঁরা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি। এখানে তাঁদের দায় আছে কি না-তদন্ত করার দাবি জানান তিনি।’ এতদিনেও নতুন প্রশাসন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারা তাঁদের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেন আসাদুল্লাহ আল গালিব।
এদিকে, গত ২৪ অক্টোবর এক অফিস আদেশে ছাত্রলীগের হামলা ও অস্ত্র-মাদক উদ্ধারের বিষয়ে খতিয়ে দেখতে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়া। দ্রুতই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে ওই অফিস আদেশে। কমিটির আহ্বায়ক মো. এছাক মিয়া বলেন, গতকাল সোমবার প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শাবিপ্রবি উপ-উপাচার্য মো. সাজেদুল করিম।
অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের বিষয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’ অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সারোয়ার জাহান বিপ্লব কর্তৃক ০২৪৪/০৩, ছোট বনগ্রাম, সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩, বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত। মোবাইল নাম্বারঃ +8801712552253, ইমেইল ঠিকানাঃ newsrajshahi24bd@gmail.com
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ নিউজ রাজশাহী টুয়েন্টিফোর।