বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন সীমানায় রয়েছে পদ্মা নদী। এসব নদী এলাকায় প্রতি বছর দেখা দেয় কম-বেশি বন্যা । এই বন্যার এক পর্যায় নদীতে পানি কমে গেলে, পলি পড়ে চর (আবাদী জমি) সৃষ্টি হয়। এরপর ওই সব জমিতে চাষ করা হয় নানা প্রকার ফসল। তবে এসব ফসলি মাঠের প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি এবার প্রভাবশারীদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চরাঞ্চলবাসী।
চরাঞ্চলের লোকজন জানান , এদেশের ভৌগোলিক অবস্থা, জলবাযু ও গতিপথ পরিবর্তন জনিত কারণে নদীর তীরে যেমন মাঝে-মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়, তেমনি আবার নদীর বুকে জেগে ওঠা পলিমাটি দ্বারা নতুন রুপে চর তৈরী হয়। বর্তমানে নদীতে স্রোত-সহ পানি কমে যাওয়ায় নদীর উভয় তীরে বিশাল চর জেগছে। আর এসব চরে এখন নানা প্রকার ফসল উৎপাদন হচ্ছে। তবে ফসল উৎপাদিত জমির বেশির ভাগই দখল রেখেছে এলাকার প্রভাবশালী মহল। তাঁদের মতে, উপজেলার মনিগ্রাম, গড়গড়ি , পাকুড়িয়া ও চকরাজাপুর এই চার ইউনিয়ন মিলে প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি এখন প্রভাবশালীলা দখল করে ফসল চাষাবাদ করছে।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, বাঘার চার ইউনিয়ন মিলে প্রায় ২ হাজার বিঘা ফসলী জমি এখন প্রভাবশালীদের দখলে। এদের মধ্যে অনেকেই নানা কৌশলে জাল দলিল তৈরী করে জমি ভোগ দখল করছেন। তবে এ সকল জমি উদ্ধার কল্পে প্রশাসনের ভুমিকা কখনোই চোখে পড়েনি। তিনি আরো বলেন, গত বছর জেগে উঠা জমি দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দু’জন গুলিবিদ্ধ-সহ প্রায় ১০ জন আহত হন। আর এই ঘটনাটি ঘটে গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারের দক্ষিনে হবির চর এলাকায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে , গত বছর বাঘার পদ্মা নদী এলাকায় হবির চরে কিছু জমি জেগে উঠে। এ জমি চাঁদপুর ব্যাংগাড়ি গ্রামের ইউনুস মন্ডলের ছেলে সাবুল মন্ডল দখলে নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। অন্যদিকে একই জমি পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার মাঝ দিয়ার গ্রামের রহিম মন্ডলের ছেলে লিখন হোসেন মন্ডল ও নিহার হোসেন মন্ডলের ছেলে আরিফ হোসেন মন্ডল নিজের দাবি করে দখল নিতে চান। এ নিয়ে উভয় পক্ষে মধ্যে গুলা-গুলি সহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে বাঘার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর এলাকার ৭ নং ইউপি সদস্য রাসেল হোসেন সহ অনেকেই জানান, লালপুর উপজেলার নওশারা সুলতানপুর গ্রামের আবের আলীর ছেলে আলমঙ্গীর হোসেন জোর পুর্বক বাঘা উপজেলার খানপুর এলাকায় পদ্মার তীর ঘেষে সরকারি জমির উপর ঘর তুলছেন। তিনি এক সময়ের বহুল আলোচিত চরাঞ্চলের ত্রাস প্রয়াত লালচাঁন-পান্না বাহিনীর মধ্যে-পান্নার সদস্য ছিলেন। তার নামে রয়েছে বিভিন্ন থানায় ৯ টি মামলা। এই দুই বাহিনীর প্রধান বিগত সরকার আমলের প্রথম দিকে যৌথ বাহিনীর ক্রস ফায়ারে নিহত হন। তবে এক বাহিনীর প্রধান লালচান এর ছেলে সোহেল (২৪) বর্তমানে নতুন রুপে এলাকায় গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছে বলে জানান চরাঞ্চলবাসী।
সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলার নবাগত সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোসা: সাবিহা সুলতানা (ডলি) বলেন, চার ইউনিয়নের মধ্যে সরকারী (খাস) জমির পরিমান আমার সঠিক জানা নেই। এটি ইউনিয়ন ভিত্তিক তৌশীল অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তবে খাস জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত পূর্বক আইগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।