নিজস্ব প্রতিনিধি বাঘা : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের টিসিবি ও ভিজিডি কার্ড বানিজ্য এবং তথ্যসেবা কেন্দ্রে চাঁদাবাজি ও অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামের নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বাউসা বাজারে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। যাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে জামায়াতের চারজন ও বিএনপির একজন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাউসা ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়মের প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানববন্ধনের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামী বাউসা ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি মাওলানা মজিবর রহমান। ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সামশুল ইসলাম পরিচালনায় মানববন্ধনে অংশ নেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শিক্ষক ইউনুস আলী, ইউনিয়ন যুব সংস্থার সভাপতি মইিদুল ইসলাম, ১ নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান শিল্পী, ইউনিয়ণ ছাত্র শিবিরের উত্তর শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলামসহ জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্ন ফ্যাস্টুন ও ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
তবে মানববন্ধন চলাকালে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দীন নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল থেকে তারা মানববন্ধন ও জামায়াত বিরোধী শ্লোগান দেয়। এ সময় তারা জামায়াতের এ মানববন্ধনকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা মজিবর রহমান বলেন, ৫ আগষ্টের পর ইউনিয়নে টিসিবি ও ভিজিডি কার্ডসহ সুবিধা ভুগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় এবং তথ্য সেবা কেন্দ্রে সুবিধার নামে চাঁদাবাজি করা হয়েছে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে শান্তি পূর্ণ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে তাদের লোকজন বিক্ষোভ মিছিল বের করে উস্কানিমূলক ম্লোগান দেয়। আমরা গোলযোগ এড়াতে মানববন্ধন কর্মসূচি সংক্ষেপ করে চলে যাচ্ছিলাম। এ সময় তারা পিছন থেকে আমাদের উপর হামলা করে মারপিট ও ফ্যাস্টুন-ব্যানার কেড়ে নেয়। তাদের হামলায় আব্দুর রহমান (২২), সৌরভ আলী (২০), আবু তাহের (৩৩) ও হোসেন আলী (৩৪) নামের চার জামায়াত কর্মী আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, সরকারি সুবিধার বিষয়াদি নিয়ে জামায়াতের লোকজনের সাথে আলাপ আলোচনা করে কাজ করা হয়েছে। এর পরেও তারা আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। তাদের মানববন্ধন করতে নিষেধ করলেও শোনেনি। এ নিয়ে জনগন মানববন্ধনের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিবাদ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা আমাদের এক কর্মীর মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং একজনকে মারপিট করে আহত করে। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বাউসা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন, সবেমাত্র দায়িত্ব পেয়েছি। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। তবে আমি চাইলেই একা সব কিছু ভাগ বন্টন করতে পারবো না। সবাইকে নিয়েই বন্টন করতে হয়। আমি সেটাই করেছি। এখানো কোন অনিয়ম করা হয়নি।
বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, মারামারির খবর পেয়ে বাউসা বাজারে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগে সবাই সেখান থেকে চলে গেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ওই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সারোয়ার জাহান বিপ্লব কর্তৃক ০২৪৪/০৩, ছোট বনগ্রাম, সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩, বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত। মোবাইল নাম্বারঃ +8801712552253, ইমেইল ঠিকানাঃ newsrajshahi24bd@gmail.com
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ নিউজ রাজশাহী টুয়েন্টিফোর।