নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের সংঘর্ষে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
সাইফুল ইসলাম আলিফের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতির ফারেঙ্গা গ্রামে। ১৫ বছর আগে উপজেলা সদরের দরবেশহাট রোডস্থ টেন্ডল পাড়ায় জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করেন। সেখানে মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাস করছিলেন।
দরবেশহাট রোডস্থ টেন্ডল পাড়ায় সাইফুলের সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাইফুল ইসলামের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইশরাত জাহান বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। সাইফুলের মা হোসনে আরা বেগম সন্তানের জন্য বিলাপ করছেন। শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন বাবা। শিশু কন্যা মাশরুরা জাহানকে নিয়ে বসে আছেন সাইফুলের শাশুড়ি সাজেদা বেগম।
পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সাইফুল চতুর্থ। সাইফুল লোহাগাড়ার উপজেলার আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। পরে আইন বিভাগে পড়ালেখা করে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী পেশা শুরু করেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত ছিলেন।
সাইফুলের ফুফাতো ভাই আতিকুর রহমান বলেন, সাইফুল খুব নম্র ও ভদ্র ছিলেন। এলাকায় সৎ ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবসময় তাকে ভালো ও সামাজিক কাজে পাওয়া যেত। আমরা তার হত্যাকারীদের দ্রুত ফাঁসি চাই।
শাশুড়ি সাজেদা বেগম বলেন, মঙ্গলবার সকালে কোর্টে যাওয়ার সময় স্ত্রীর সঙ্গে তার শেষ কথা হয়েছে। বিকালে আদালত থেকে ফিরে স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে ফোনে কথা বলার কথা ছিল। কিন্তু আসে মৃত্যুর সংবাদ। এলাকাবাসীরা তার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।
আদালত চত্বর ও জমিউতুল ফালাহা মাঠে দুই দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে সাইফুলের। পরে লোহাগাড়া উপজেলা সদরের কর্ণেল অলি আহমদ স্টেডিয়ামে দুপুরে এবং নিজ পৈত্রিক ভূমি চুনতি ফারেঙ্গা এলাকায় আছরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।