20.7 C
Rajshahi
বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫

Buy now

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

আগামী মাস থেকে চলবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ২ জোড়া নতুন ট্রেন

print news

নিজস্ব প্রতিনিধি : আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন নিয়মিতভাবে চলাচল শুরু করবে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কামাল আখতার হোসেনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ট্রেন চলাচলের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ৭৪৩টি আসন থাকবে এবং ১৬টি কোচ নিয়ে ট্রেনগুলো চলাচল করবে।

পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এখন থেকে দুই জোড়া নিয়মিত ট্রেন চলাচল করবে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন রেলপথ চালুর পর ঢাকা থেকে দুই জোড়া স্থায়ী ট্রেন চললেও, চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করা ট্রেনটি ছিল অস্থায়ী। স্থানীয় জনগণের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন উভয়পথে চালানো হবে।’

অফিস আদেশ অনুযায়ী, সৈকত এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ৮২১) প্রতিদিন ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে এবং সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। আর প্রবাল এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ৮২২) কক্সবাজার থেকে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর প্রবাল এক্সপ্রেস আবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে এবং সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার পৌঁছাবে। সৈকত এক্সপ্রেস কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা ৮টা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। তবে, সোমবার সাপ্তাহিক বন্ধের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

সৈকত এক্সপ্রেস ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে। অন্যদিকে, প্রবাল এক্সপ্রেস থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথটি ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে উদ্বোধন করা হয়। এরপর ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়। ইঞ্জিন, কোচ ও লোকবল সংকট দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চালু হয়নি। পরে অবশ্য ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বরাদ্দ রাখা হয়। জানুয়ারিতে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। ট্রেনটি জনপ্রিয় হলেও, ওই বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে ঈদুল আজহার সময় ১২ জুন থেকে বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়, যা এখনো চলছে।

এই রুট উদ্বোধনের পর থেকেই চট্টগ্রাম থেকে স্থায়ী ট্রেন চালুর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। বিশেষ ট্রেনটি স্থায়ী করার পাশাপাশি আরেকটি নতুন ট্রেন চালুর প্রস্তাবনাসহ একটি চিঠি ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর রেলওয়ের মহাপরিচালককে দেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কক্সবাজার রুটের পর্যটকদের পাশাপাশি স্থায়ীদের মধ্যেও ট্রেনের চাহিদা রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে দৈনিক গড়ে ৪০ হাজার মানুষ কক্সবাজারে যাতায়াত করে। এরমধ্যে ১০ হাজার মানুষও যদি ট্রেনে ওঠেন, তবে এটি হবে সবচেয়ে লাভজনক রুট। দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়ক এবং রেলের ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় এই রুটের ট্রেন জনপ্রিয়তা পায়।

রেলওয়ের তথ্যমতে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর পর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৩ জন যাত্রী পরিবহণ করা হয়েছে । রেলের আয় হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৭২ কোটি টাকা আসে তিনটি ট্রেন থেকে।

রেলওয়ে আরও জানিয়েছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিশেষ ট্রেনটিতে সাড়ে পাঁচ মাসের কম সময়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬২ জন যাত্রী চড়েছেন। রেলের আয় হয়েছে ২ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ টাকা।

সম্পর্কিত সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ